পঞ্চম শ্রেণি - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ২ - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (১-১৪)
১. প্রশ্ন: ইংরেজরা কেন ভারতে এসেছিল এবং কবে তারা ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে?
উত্তর: মোগল আমলে ইংরেজরা ব্যবসা করতে ভারত উপমহাদেশে আসে। ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে বাণিজ্য পরিচালনার জন্য ১৬০০ সালে তারা ব্রিটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে।
২. প্রশ্ন: ব্রিটিশ শাসনের দুটি খারাপ ও দুটি ভালো দিক উল্লেখ করো।
উত্তর: ব্রিটিশ শাসনের দুটি খারাপ দিক:
ক. ‘ভাগ করো শাসন করো’—নীতির ফলে এ দেশের মানুষের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
খ. অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো দিক:
ক. নতুন নতুন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি হয়।
খ. সড়কপথ ও রেলপথ উন্নয়ন এবং টেলিগ্রাফ প্রচলনের ফলে যোগাযোগব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়।
৩. প্রশ্ন: বাংলার শেষ নবাব কে ছিলেন এবং কত সালে তিনি বাংলার নবাব হন?
উত্তর: বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজ-উদ-দৌলা। তিনি ১৭৫৬ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন।
৪. প্রশ্ন: নবাবের বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করে?
উত্তর: নবাবের বিরুদ্ধে তিনটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে—তাঁর পরিবারের কিছু সদস্য, বিশেষ করে খালা ঘসেটি বেগম, এদেশীয় বণিক রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ। এ ছাড়া ষড়যন্ত্রে ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান মীর জাফর এবং ইংরেজ বণিকগণ।
৫. প্রশ্ন: নবাব কেন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন?
উত্তর: এ দেশের বণিকেরা ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে নবাবের বিরুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে যোগ দেন। সেনাবাহিনীর প্রধান মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব পরাজিত হন।
৬. প্রশ্ন: ইতিহাসের কোন সময় ‘কোম্পানির শাসন’ নামে পরিচিত এবং কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা কে ছিলেন?
উত্তর: ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ১০০ বছর এ দেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলে। ইতিহাসে যা ‘কোম্পানির শাসন’ নামে পরিচিত। কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা ছিলেন লর্ড ক্লাইভ।
৭. প্রশ্ন: ব্রিটিশদের ‘ভাগ করো শাসন করো’ নীতির ফলে কী হয়েছিল?
উত্তর: ব্রিটিশদের ‘ভাগ করো শাসন করো’ নীতির ফলে এ দেশের মানুষদের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, জাতি এবং অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
৮. প্রশ্ন: ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ কী?
উত্তর: ব্রিটিশ শাসনামলে অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ বাংলা ১১৭৬ সালে (ইংরেজি ১৭৭০) হয়েছিল, ‘যা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত।
৯. প্রশ্ন: ‘বাংলার নবজাগরণ’ কাকে বলে?
উত্তর: ব্রিটিশ শাসনামলে শিক্ষা ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে উনিশ শতকে বাংলায় সামাজিক সংস্কারসহ শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে, যা ‘বাংলার নবজাগরণ’ নামে পরিচিত।
১০. প্রশ্ন: সেনাবাহিনীতে ভারতীয় এবং ব্রিটিশ সিপাহির সংখ্যা কত ছিল?
উত্তর: সেনাবাহিনীতে ৫০ হাজার ব্রিটিশ এবং ৩ লাখ ভারতীয় সিপাহি ছিল।
১১. প্রশ্ন: তিতুমীর কেন বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন?
উত্তর: তিতুমীর ইংরেজ বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য বারাসাতের কাছে নারকেলবাড়িয়া গ্রামে একটি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন। ১৮৩১ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিতুমীর পরাজিত ও নিহত হন।
১২. প্রশ্ন: বঙ্গভঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর: শিক্ষার প্রসার এবং নবজাগরণের ফলে সারা বাংলায় দেশপ্রেমের চেতনা বিস্তার লাভ করে। ব্রিটিশরা ভারতীয় চেতনার প্রসারে ভীত হয়ে পড়ে এবং ১৯০৫ সালে বাংলা প্রদেশকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। একে বঙ্গভঙ্গ বলে।
১৩. প্রশ্ন: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে কবি ও লেখকেরা কীভাবে বেগবান করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকের কবিতা, গান ও লেখার মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধিকারের চেতনা আরও বেগবান হয়।
১৪. প্রশ্ন: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যাঁদের আত্মত্যাগ ও সাহসী ভূমিকা চিরস্মরণীয়, তাঁদের নাম লেখো।
উত্তর: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ক্ষুদিরাম বসু, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এবং মাস্টারদা সূর্য সেনের আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা চিরস্মরণীয়।
No comments