পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় টিউটোরিয়াল -৭৬

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
আফরোজা বেগম,সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ উত্তরা, ঢাকা
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ
[পূর্বে প্রকাশিত অংশের পর]
প্রশ্ন : ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয় কেন?
উত্তর : মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা এ দেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করে। ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণী শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিকদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। এদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রাশীদুল হাসান, সাংবাদিক সেলিনা পারভিন, ডা. আলীম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. গোলাম মর্তুজা, ডা. আজহারুল হক এবং আরও অনেকে। এসব শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্মরণে আমরা প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি। এ শহীদদের রক্তে ভিজে আছে বাংলাদেশের মাটি। যেমন তাদের জন্য ভিজে আছে স্বজনদের চোখ। দেশের জন্য যারা প্রাণ দিলেন, তারা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, তারা আমাদের অতি আপনজন, পরমাত্মীয়। তাদের প্রাণের বিনিময়ে তাদের রক্তস্নাত নদী পাড়ি দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন দেশ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। তাই তাদের অবদানকে স্মরণ করতে, তাদের ঋণকে শ্রদ্ধা জানাতে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের সঙ্গে তাদের পরিচয় করাতেই আমরা ১৪ ডিসেম্বর পালন করি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
* দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এদের কারও কারও ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া গিয়েছিল মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে।
ব্রিটিশ শাসন
অল্প কথায় উত্তর দাও
প্রশ্ন : সিপাহী বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ লিখ।
উত্তর : সিপাহী বিদ্রোহ : পলাশী যুদ্ধের ১০০ বছর পর ১৮৫৭ সালে পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সিপাহীদের যে বিদ্রোহ সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে তা-ই ইতিহাসে সিপাহী বিদ্রোহ বা স্বাধীনতার প্রথম সশস্ত্র সংগ্রাম হিসেবে খ্যাত।
কারণ
সিপাহী বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ নিচে দেয়া হল-
* সেনাবাহিনীতে সিপাহী পদে ভারতীয়দের সংখ্যাধিক্য ছিল। সেখানে ৫০,০০০ ব্রিটিশ এবং ৩,০০,০০০ ভারতীয় সিপাহী ছিল।
* ভারতের বিভিন্ন এলাকার সৈন্যদের মধ্যে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল।
* ১৮৫৬ সালের পর ভারতের বাইরেও সৈন্যদের কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
* কামান ও বন্দুকের কার্তুজ পিচ্ছিল করার জন্য গরুর এবং শুকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্র্মীয় অশান্তি তৈরি করা হয়েছিল।
* সৈন্যদের আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর জন্য সাধারণ মানুষ প্রস্তুত ছিলেন।
তাই এ আন্দোলন দ্রুত সিপাহী বা সৈন্যদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার কঠোর হাতে এ বিদ্রোহ দমন করে। এ বিদ্রোহে প্রায় ১,০০,০০০ ভারতীয় মারা যায়।
সুতরাং, সিপাহী বিদ্রোহ সামাজিক, ধর্মীয়সহ নানা কারণে সংঘটিত হয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.