পঞ্চম শ্রেণির - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ১ : প্রশ্নোত্তর (১-২৩)
অধ্যায় ১
১. প্রশ্ন: মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় উপাধিগুলো কী কী?
উত্তর: মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় উপাধিগুলো হলো—
ক. বীরশ্রেষ্ঠ, খ. বীর উত্তম, গ. বীর বিক্রম ও ঘ. বীর প্রতীক।
২. প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রথম সরকার কোথায় এবং কবে গঠিত হয়?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রথম সরকারের নাম ‘মুজিবনগর সরকার’। তত্কালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলায়
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠিত হয়।
৩. প্রশ্ন: মুজিবনগর সরকারের অন্যতম ২ জন সদস্যর নাম লেখো।
উত্তর: মুজিবনগর সরকারের অন্যতম ২ জন সদস্য হলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী।
৪. প্রশ্ন: মুজিবনগর সরকারের প্রধান কাজগুলো লেখো।
উত্তর: মুজিবনগর সরকারের প্রধান কাজ ছিল মুক্তিযুদ্ধকে সঠিক পথে পরিচালনা করা এবং দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন ও সমর্থন আদায় করার ক্ষেত্রে সফলতা লাভ করা।
৫. প্রশ্ন: মুক্তিবাহিনীকে কয়টি ব্রিগেড ফোর্সে ভাগ করা হয়েছিল এবং কী কী?
উত্তর: মুক্তিবাহিনীকে তিনটি ব্রিগেড ফোর্সে ভাগ করা হয়েছিল। যথা:
১. কে ফোর্স
২. এস ফোর্স
৩. জেড ফোর্স
৬. প্রশ্ন: মুক্তিবাহিনী কবে গঠিত হয় এবং এ বাহিনীর সেনাপতি কারা ছিলেন?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ১১ জুলাই মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়। এ বাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী এবং উপপ্রধান সেনাপতি ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার।
অধ্যায় ১
৭. প্রশ্ন: মুক্তিফৌজ কতজন যোদ্ধা নিয়ে গঠিত হয় এবং এই মুক্তিফৌজ কাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে?
উত্তর: ৩০ হাজার নিয়মিত যোদ্ধাকে নিয়ে গঠিত হয় মুক্তিফৌজ। এক লাখ গেরিলা ও বেসামরিক যোদ্ধার সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিফৌজ যুদ্ধ করেছিল।
৮. প্রশ্ন: গেরিলা বাহিনীর অ্যাকশন গ্রুপ ও ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের কাজ কী ছিল?
উত্তর: গেরিলা বাহিনীর ‘অ্যাকশন গ্রুপ’ অস্ত্র বহন করতেন এবং সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিতেন। ‘ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ শত্রুপক্ষের গতিবিধি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করতেন।
৯. প্রশ্ন: অপারেশন সার্চলাইট কী?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, শিক্ষকদের বাসভবনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আক্রমণ করে। এই আক্রমণের নাম ছিল অপারেশন সার্চলাইট।
১০. প্রশ্ন: ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী’ দিবস কবে? কেন এটি পালন করা হয়?
উত্তর: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হলো ১৪ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিত্সক ও কবি-সাহিত্যিকদের স্মরণে দিনটি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয়।
১১. প্রশ্ন: অপারেশন জ্যাকপট’ নামক আক্রমণে কোন কোন বাহিনী অংশ নেয়?
উত্তর: অপারেশন জ্যাকপট’ নামক আক্রমণে ভারতের মিত্রবাহিনী ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী মিলে যুদ্ধ করে।
১২. প্রশ্ন: যৌথ বাহিনী কবে গঠিত হয় এবং এর নেতৃত্বে কে ছিলেন?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী মিলে গঠিত হয় যৌথ বাহিনী। যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মিত্রবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।
১৩. প্রশ্ন: পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিল কোথায় স্বাক্ষর হয় এবং কারা এ দলিলে স্বাক্ষর করেন?
উত্তর: ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যৌথ বাহিনীর পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন।
১৪. প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন?
উত্তর: ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।
১৫. প্রশ্ন: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস বলতে কী বোঝ? কোন তারিখে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়? দিবসটি পালনের ৪টি কারণ লেখো।
উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা নেয় পাকিস্তানি বাহিনী। সেই পরিকল্পনা অনুসারে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের তারা নৃশংসভাবে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার চূড়ান্ত দিনটিকে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালন করা হয়।
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের ৪টি কারণ—
ক. শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া
খ. তাঁদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করা
গ. মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অবদানের কথা নতুন প্রজন্মকে জানানো
ঘ. বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগানো।
১৬. প্রশ্ন: অপারেশন সার্চলাইট কী? কার নির্দেশে এ আক্রমণ করা হয়? পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে ৪টি বাক্য লেখো।
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আক্রমণ করে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এই আক্রমণের নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন সার্চলাইট। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এ আক্রমণ চালায় ২৫ মার্চ রাতে।
পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে নিচে ৪টি বাক্য দেওয়া হলো—
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও শিক্ষকদের বাসভবনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে একযোগে আক্রমণ করে। সেই ভয়াল রাতে হানাদার বাহিনী দেশের অন্য বড় বড় শহরেও আক্রমণ চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, পুলিশ ও ইপিআর সদস্যসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। যা গণহত্যার শামিল। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালি শহিদ হন।
১৭. প্রশ্ন: ১৯৭১ সালের বাঙালি জাতির গৌরবময় ঘটনা কোনটি? কত সাল থেকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালির ওপর অত্যাচার ও নিপীড়ন শুরু করে? মুক্তিযুদ্ধের তাত্পর্য চারটি বাক্য লেখো।
উত্তর: ১৯৭১ সালের ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ’ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গৌরবময় ঘটনা। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর শুরু করে শোষণ ও নিপীড়ন।
মুক্তিযুদ্ধের তাত্পর্য লেখা হলো—
ক. মুক্তিযুদ্ধের ফলেই পৃথিবীর বুকে আজ আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ
খ. মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে আমরা পেয়েছি নিজস্ব একটি ভূখণ্ড, একটি নিজস্ব পতাকা
গ. আমরা পেয়েছি স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার
ঘ. পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে পেরেছি
১৮. প্রশ্ন: মুক্তিবাহিনী কবে গঠিত হয়েছিল? মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় স্লোগান কী ছিল? বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বসূচক উপাধি সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: ১৯৭১ সালের ১১ জুলাই মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার বীরত্বসূচক রাষ্ট্রীয় উপাধি প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে শহিদ হয়েছেন এমন সাতজনকে সর্বোচ্চ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধি প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া সাহসিকতা এবং ত্যাগের জন্য আরও তিনটি উপাধি দেওয়া হয়েছে। উপাধিগুলো হলো: বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক।
১৯. প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অবদান সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। এ যুদ্ধে দলমত-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষও এ যুদ্ধে অবদান রাখেন। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, আশ্রয় এবং তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন। অনেক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। সংস্কৃতিকর্মীরা তাঁদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। এ ছাড়া প্রবাসী বাঙালিরা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।
২০. প্রশ্ন: কত সালে বাঙালিরা ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে? আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ কীভাবে শুরু হয়? এমন ৪টি ঘটনার কথা উল্লেখ করো যা মুক্তিযুদ্ধ সংঘটনে ভূমিকা রেখেছিল?
উত্তর: ১৯৫২ সালে বাঙালিরা ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়।
আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংঘটনে ভূমিকা রেখেছে এমন চারটি ঘটনা হলো–
ক. ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন
খ. ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান
গ. ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় হওয়ার পরও ক্ষমতা না দেওয়া
ঘ. ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নারকীয় গণহত্যা ও বাঙালিদের প্রতিরোধ।
২১. প্রশ্ন: আমরা কবে স্বাধীনতা দিবস পালন করে থাকি? কতবার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে এই দিবস শুরু করা হয়। আমরা কীভাবে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করি?
উত্তর: আমরা ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করে থাকি। এ দিনটি আমরা জাতীয়ভাবে উদ্যাপন করে থাকি।
এ দিনের শুরু হয় ভোরে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়া শুরু হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের সমাবেশ হয়। জাতীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজস্ব ইউনিফর্ম পরিধান করে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী তাদের সালাম গ্রহণ করেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতা বাণী প্রদান করে থাকেন। রেডিও-টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে। বিভিন্ন স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে আমরা দিবসটি উদ্যাপন করি।
২২. প্রশ্ন: ভারত শরণার্থীদের কীভাবে সাহায্য করেছিল? মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের কীভাবে সাহায্য করেছিল?
উত্তর: মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ দেশ থেকে বহু মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। ভারত সরকার আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের খাবার, থাকার ব্যবস্থা, বস্ত্র ও চিকিত্সাসেবা দিয়ে সাহায্য করে।
মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য ভারত মিত্রবাহিনী গঠন করে। ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক আক্রমণে মিত্রবাহিনী বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ করে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং
অরোরার নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে মিলে যৌথবাহিনী গঠন করে। মুক্তিযুদ্ধে দুই দেশের এই উদ্যোগ আমাদের বিজয় অর্জনকে সহজ করে দেয়।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান বিমানবাহিনী হঠাৎ করেই ভারতের কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়। এর ফলে যৌথবাহিনী একযোগে স্থল, নৌ ও আকাশপথে আক্রমণ করে। যৌথ বাহিনীর তীব্র আক্রমণে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এর ফলে আমরা মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে বিজয় অর্জন করি।
২৩. প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা কী ছিল? সাধারণ মানুষ কীভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে?
উত্তর: বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে নারীর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। আবার অনেক নারী খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ করতে প্রেরণা জুগিয়েছেন।
এ দেশের সাধারণ মানুষ নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। পুরুষরা সরাসরি সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতে সবাই সবসময় সচেষ্ট থেকেছেন। এ দেশের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
রাবেয়া সুলতানা, শিক্ষক, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, ঢাকা
No comments