পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় টিউটোরিয়াল -৬৮
বাংলাদেশ
ও বিশ্বপরিচয়
আফরোজা
বেগম, সিনিয়র
শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ উত্তরা, ঢাকা
আমাদের
মুক্তিযুদ্ধ
প্রশ্ন
: কাদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়েছে?
উত্তর
: ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। সরকার গঠনের পরপরই এ সরকার
সর্বপ্রথম মুক্তিবাহিনী গঠনের দিকে উদ্যোগ নেয়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআরের
বাঙালি সদস্য, পুলিশ, আনসার, ছাত্র, যুবক, নারী, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী নিয়ে
গড়ে ওঠে মুক্তিবাহিনী। এ বাহিনীর-
প্রধান
সেনাপতি : কর্নেল (পরবর্তীতে জেনারেল) মুহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী
উপ-প্রধান
সেনাপতি : গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকার।
সেনাবাহিনী
প্রধান : লে. কর্নেল আবদুর রব।
মুক্তি
ফৌজ : বাঙালি সাময়িক অফিসার ও সৈন্যদের নিয়ে গঠিত ছিল মুক্তিবাহিনীর নিয়মিত
বাহিনী। এদের বলা হতো মুক্তিফৌজ। অনিয়মিত বাহিনী : বেসামরিক সর্বস্তরের জনগণ নিয়ে
গড়ে উঠেছিল অনিয়মিত বাহিনী।
বিশেষ
বাহিনী : দেশের অভ্যন্তরে আঞ্চলিক পর্যায়ে অন্যান্য বেশ কিছু ছোট বাহিনী গড়ে ওঠে।
যেমন : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ‘কাদেরিয়া বাহিনী’
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নেতৃত্বে ‘মায়া বাহিনী’
উল্লেখযোগ্য।
মুক্তিযুদ্ধের
শেষের দিকে গঠিত হয় বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স বা বিএলএফ।
সুতরাং
এ দেশের সামরিক, বেসামরিক তথা আপামর জনসাধারণকে নিয়ে গড়ে ওঠে মুক্তিবাহিনী।
যুদ্ধের ৯ মাস ধরে মুক্তিবাহিনীর নির্ভীক সদস্যরা অদম্য প্রতিরোধ ও আক্রমণ গড়ে
তুলে স্বাধীনতার টকটকে সূর্যকে ছিনিয়ে আনে।
প্রশ্ন
: মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ কীভাবে অংশ নিয়েছিলেন?
উত্তর
: এ দেশের সামরিক, বেসামরিক তথা আপামর জনসাধারণকে নিয়ে ১৯৭১ সালে গড়ে উঠেছিল
মুক্তিবাহিনী। গেরিলা আক্রমণ ও সম্মুখযুদ্ধ ছিল প্রধান যুদ্ধ কৌশল। এ যুদ্ধে ছিল
না আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত কোনো প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী।
*
যুদ্ধের সময় এ দেশের অগণিত সাধারণ মানুষ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মুক্তিবাহিনীর
পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। থাকা-খাওয়া, তথ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য দিয়ে
মুক্তিবাহিনীকে লড়াই চালিয়ে যেতে তারা উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। এসব কাজে নারীদের বিশেষ
ভূমিকা ছিল।
*
সংস্কৃতি কর্মীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা গান, নাটক, ক্রোড়পত্র পাঠ ইত্যাদির
মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বাড়াতেন।
*
এ দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরাও সক্রিয়ভাবে এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। * সব বিপদ
তুচ্ছ করে মুক্তিবাহিনী ও বাংলার অগণিত মুক্তিকামী জনতা শহরে, গ্রামে যে যেভাবে
পেরেছিল রুখে দাঁড়িয়েছিল। * সবার মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ব্যাপক
রূপ লাভ করে। এভাবে যুদ্ধের ৯ মাস ধরে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ও সাধারণ মানুষ গড়ে
তুলেছিল অদম্য প্রতিরোধ ও আক্রমণ। মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ
নিয়েছিলেন। আমি তাদের অবদান, সাহস ও সহাযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করি।
No comments