পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় টিউটোরিয়াল -৮০

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
আফরোজা বেগম, সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ উত্তরা, ঢাকা
ব্রিটিশ শাসন
প্রশ্ন : ২. ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো ও দুটি খারাপ দিক উল্লেখ কর।
উত্তর : ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিপ্লবের পর থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯০ বছর পর্যন্ত ভারতের শাসনভার ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে মহারানী ভিক্টোরিয়া স্বাধীনভাবে ভারতবর্ষ শাসন করে। এ শাসন আমলই ব্রিটিশ শাসন নামে ইতিহাসখ্যাত।
নিচে ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো ও দুটি খারাপ দিক উল্লেখ করা হল-
ভালো দিক
* নতুন নতুন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়। এ সময় সামাজিক সংস্কারসহ শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে। * সড়কপথ, রেলপথ উন্নয়ন এবং টেলিগ্রাফ প্রচলনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়। শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে।
২টি খারাপ দিক
* ভাগ কর শাসন কর নীতির ফলে এ দেশের মানুষের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, জাতি এবং অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়। [অল্পসংখ্যক জমিদার শ্রেণি অনেক জমির মালিক হন এবং বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গরিব হয়ে যান।
* অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ বাংলা ১১৭৬ সালে (ইংরেজি ১৭৭০) হয়েছিল যা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
সুতরাং, ব্রিটিশ শাসন আমলের শোষণনীতিই ভারতবর্ষের ঐতিহ্যকে ম্লান করেছে আর আমাদের শিখিয়েছে দাসত্ব।
প্রশ্ন : ৩. বাংলার নবজাগরণে কারা অবদান রেখেছেন?
উত্তর : আধুনিক ও ইংরেজি শিক্ষার ফলে এ দেশে উনিশ শতকের শেষের দিকে ক্রমে একটা ইংরেজি শিক্ষিত শ্রেণি গড়ে ওঠে। এদের একাংশের মধ্যে নতুন চেতনার বিকাশ ঘটতে থাকে। এরা নিজেদের সমাজে বহুকাল ধরে প্রচলিত নানা কুসংস্কার, কুপ্রথা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠেন। আর নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে উনিশ শতকে বাংলায় ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পর নবজাগরণ ঘটে।
বাংলার নবজাগরণে নিুলিখিত বরেণ্য ব্যক্তিরা অবদান রেখেছেন।
* রাজা রাম মোহন রায়} সমাজ সংস্কারক
* ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর}
* স্যার সৈয়দ আহমদ খান} সমাজ সংস্কারক শিক্ষক ও প্রসারক
* নবাব আব্দুল লতিফ * সৈয়দ আমীর আলী
 নারী শিক্ষার অগ্রদূত"* বেগম রোকেয়া
 নারী শিক্ষা ও চিকিৎসার প্রসারক ও সমাজ সংস্কারক"* নবাব ফয়জুন্নেসা
সুতরাং, নবজাগরণের মাধ্যমে সামাজিক সংস্কার, শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের অসামান্য অবদান আমরা চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব ও তাদের অবদান অনুসরণ করব।

No comments

Powered by Blogger.