পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা টিউটোরিয়াল -১৩
ইসলাম
ও নৈতিক শিক্ষা
মো.
ফোরকান আহমেদ, সহকারী
শিক্ষক, মুনলাইট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
আকাইদ-বিশ্বাস
[পূর্বে
প্রকাশিত অংশের পর]
প্রশ্ন
: আল্লাহ ক্ষমাশীল- এর ব্যাখ্যা কর।
উত্তর
: আলাহু গাফুরুন অর্থ আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করা, মাফ করা মহান আল্লাহর
অন্যতম গুণ। মানুষ পথ চলতে গিয়ে মনের অজান্তে ভুল করে। মন্দ কাজ করে।
আল্লাহতায়ালার হুকুম অমান্য করে। এমনকি শয়তানের প্ররোচনায় এবং কু-রিপুর তাড়নায়ও
অনেক সময় অন্যায় ও পাপ কাজ করে থাকে। কোনো ব্যক্তি যখন তার পাপ কাজের জন্য অনুতপ্ত
হয় এবং ভবিষ্যতে পাপ কাজ না করার সংকল্প করে, আগের সব অন্যায় ও ভুল সে বুঝতে পেরে
তার ভুল স্বীকার করে, তখন তার মনে অনুশোচনা হয়, দুঃখ হয়, এ অবস্থায় সে যদি আল্লাহর
দরবারে ক্ষমা চায় এবং অনুতাপে চোখের পানি ফেলে কাঁদে। তখন আল্লাহতায়ালা তাকে
নিজগুণে ক্ষমা করে দেন। কারণ আল্লাহতায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল। কোরআন মাজিদে আছে : ‘নিশ্চয়ই
আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।
বুখারি
শরিফে একটি হাদিস রয়েছে, এক ব্যক্তি সারা জীবন আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার
ব্যাপারে উদাসীন ছিল। মৃত্যুর আগে সে তার সন্তানদের বলে গিয়েছিল যেন তাকে পুড়িয়ে
ছাইগুলো দূরের পাহাড়গুলোয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। তার মৃত্যুর পর তাকে আল্লাহতায়ালা
জিজ্ঞেস করেন, তুমি এরূপ করতে কেন বলেছিলে? সে উত্তর দিল, আমি ভেবেছিলাম, সারা
জীবন এত পাপ করেছি যে, মৃত্যুর পর তুমি আমাকে শাস্তি দেবে। অবশ্যই আমরা আল্লাহর
হুকুম মানব, ইবাদাত-বন্দেগি করব। পাপের কাজ থেকে বিরত থাকব, তাহলে পরকালে জান্নাত
পাব। জাহান্নামের দুঃখ কষ্ট থেকে রেহাই পাব।
প্রশ্ন
: নবী-রাসূলগণের শিক্ষার মূল কথাগুলো কী?
উত্তর
: আল্লাহ মহাজ্ঞানী। একমাত্র তিনিই মানুষের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অবগত
আছেন। আল্লাহতায়ালা তাঁর পছন্দনীয় ও কল্যাণের পথ মানুষকে দেখানোর জন্য অনেক নবী
রাসূল (আ.) পাঠিয়েছেন। তারা ছিলেন হাদী বা পথপ্রদর্শক। নবী-রাসূলগণ (আ.) মানুষকে
যেসব শিক্ষা দিয়ে গেছেন, সেগুলোর মূল লক্ষ্য হল :
তাওহিদ
বা একত্ববাদ : আল্লাহতায়ালা এক। তাঁর কোনো শরিক নেই, তাঁর কোনো সমকক্ষ নেই।
রিসালাত
ও নবুওয়্যাত : নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার বাণীগুলো মানুষের কাছে পৌঁছান
হতো।
দ্বীন
: আল্লাহর দেয়া জীবন ব্যবস্থা।
আখলাক
: সুন্দর চরিত্র।
শরিয়ত
: জীবনযাপনের বিধান। ধর্মের দৃষ্টিতে বৈধ-অবৈধ বা হালাল-হারাম এবং জায়েজ না জায়েজ
শিক্ষা সংবলিত বিধি-বিধান।
আখিরাত
: মৃত্যুর পরের জীবন।
নবী-রাসূলগণ
দুনিয়ার সব অঞ্চলের মানুষকে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন।
প্রশ্ন
: আখিরাতের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর নাম লিখ।
উত্তর
: মৃত্যুর পরের জীবনকে আখিরাত বলে। হজরত আদম (আ.) থেকে শেষ নবী হজরত মুহাম্মাদ
(সা.) পর্যন্ত সব নবী-রাসূলই আখিরাতের জীবন সম্পর্কে বলে গেছেন। সবাই আখিরাতের
প্রতি ঈমান আনার জন্য মানুষকে আহ্বান করেছেন। নবী-রাসূলগণ ঘোষণা করে গেছেন : যারা
দুনিয়ায় সৎ মানুষ হিসেবে জীবনযাপন করে, যারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলে, যারা
নবী-রাসূলের আদর্শ অনুসরণ করে, যারা শয়তানের পথ অনুসরণ করে না, তারা সবাই পরকালে
জান্নাত লাভ করবে। তারা নাজাত পাবে। আখিরাতের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়গুলো
হল-
১.
কবরে সাওয়াল-জাওয়াব,
২.
কবরের আরাম অথবা আজাব,
৩.
কিয়ামত, ৪. হাশর, ৫. মিজান,
৬.
জান্নাত অথবা জাহান্নাম।
No comments