পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা টিউটোরিয়াল -১০
ইসলাম
ও নৈতিক শিক্ষা
অধ্যায়-১:
আকাইদ-বিশ্বাস
প্রশ্ন
: আল্লাহতায়ালা সম্পর্কে জানা ও ঈমান আনার জন্য আমাদের কী কী কাজ জরুরি?
উত্তর
: উপস্থাপনা : কবির ভাষঝঝায় বলতে হয়
‘এই
সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি
খোদা
তোমার মেহেরবানি।
শস্য
শ্যামল ফসল ভরা মাটির ডালিখানি
খোদা
তোমার মেহেরবানি।’
কবির
দৃষ্টিতে স্রষ্টার সৃষ্টি ফুটে উঠেছে। যিনি এই সুন্দর মহাবিশ্ব, পৃথিবী, চন্দ্র,
সূর্য, গ্রহ, তারা, সাগর, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের
সবাইকে সুন্দরতম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব কিছুর মালিক আমাদের পালনকর্তা,
রিজিকদাতা, মৃত্যু ও জীবনের মালিক। সেই মহান সত্তা অর্থাৎ আল্লাহতায়ালার সম্পর্কে
আমাদের জানা অতিভয় জরুরি। আল্লাহর পরিচয়, আল্লাহর অস্তিত্ব, আল্লাহর গুণাবলী,
আল্লাহর বিধান, আল্লাহর সৃষ্টিগুলো। এ সমগ্র সৃষ্টিকুলের স্রষ্টা হলেন মহান
আল্লাহতায়ালা। যার কোনো শরিক নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাহার কোনো সমকক্ষ নেই।
তিনি কারও হতে জন্মগ্রহণ করেন নাই। কাউকে জন্ম দেন নাই। তিনি একমাত্র আমাদের সবার
স্রষ্টা বা প্রভু। তিনি সর্বশক্তিমান ও প্রজ্ঞাময় এবং তিনি সব বিষয়ে জানেন।
আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস থাকা জরুরি। সমগ্র সৃষ্টিকুলের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ।
আল্লাহ হলেন আকাশ ও জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছুর মালিক। আল্লাহ এক ও
অদ্বিতীয়। তার কোনো শরিক নেই। ইবাদতের একমাত্র মালিক আল্লাহতায়ালা। অন্য কাউকে তার
সঙ্গে শরিক করা যাবে না কেননা শরিক করা বড় গুনাহের কাজ। আমাদের পবিত্র মহান গ্রন্থ
আল-কোরআন মাজিদে আল্লাহ পাকের অনেক গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ হলেন এ
মহাবিশ্বের সব প্রাণীর পালনকর্তা; তিনি ক্ষমাশীল; তিনি সহনশীল; তিনি সর্বশক্তিমান;
তিনি রিজিকদাতা; তিনি সব শোনেন সব জানেন; তিনি সব বিষয়ে প্রজ্ঞাময়। তিনি পবিত্র
মহান গ্রন্থ আল-কোরআনে আমাদেরকে তার গুণে গুণান্বিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহর আইন ও বিধান অনুসরণ করে চললে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। আল্লাহর
বিধান হচ্ছে আল-কোরআন মাজিদ। কোরআন আমাদের পড়তে হবে, বুঝতে হবে এবং তা অনুসরণ করে
জীবনযাপন করতে হবে। আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করে শেষ করা সম্ভব নয়। তবে তার
সৃষ্টির সেরা জীব অর্থাৎ আশরাফুল মাখলুকাত হল মানুষ। তিনি মানুষকে স্বাধীন
ইচ্ছাশক্তি, জ্ঞান, বুদ্ধি দিয়েছেন। এ ছাড়া আরও অনেক কিছু সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর
মধ্যে কয়েকটার নাম নিচে উল্লেখ করা হল- আকাশ, জমিন, মাটি, পাহাড়-পর্বত,
সাগর-মহাসাগর, নদী-নালা, চন্দ্র, সূর্য, বৃষ্টি, ঝড়, ফুল-ফল, গাছপালা, জিন,
পশু-পাখি, পোকামাকড়, জীব-জন্তু, জানোয়ার। এ ছাড়া তিনি আঠারো হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি
করেছেন। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী নবী-রাসূলগণ থেকে আমরা তাওহিদ, রিসালাত, দ্বীন,
আখলাক, শরিয়ত ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করে, ইহকালে মঙ্গল ও পরকালে জান্নাত
লাভ করতে পারব। আমাদের পথ দেখিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহ যুগে যুগে সব সম্প্রদায়ের কাছে
নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা ওহির মাধ্যমে তাদের সঠিক জ্ঞান দান করেছেন এবং
তাদের ওপর আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন, আমাদের হেদায়াতের জন্য। এগুলোর মধ্যে
সর্বশেষ আসমানি কিতাব হল আল-কোরআন। ঈমান আনার জন্য সর্বপ্রথমে আমাদের আল্লাহ ছাড়া
অন্য কোনো প্রভুত্ব স্বীকার করা যাবে না। আল্লাহর সৃষ্টি ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান
আনতে হবে। পরকালের জীবনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। জান্নাত ও জাহান্নামের
প্রতি বিশ্বাস করতে হবে। মৃত্যুকে বিশ্বাস করতে হবে। নবী-রাসূলের প্রতি ঈমান আনতে
হবে এবং আসমানি কিতাবগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। পরিশেষে বলা যায়,
আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি চিরজীবী, চিরস্থায়ী, তার কোনো ধ্বংস নেই।
No comments